অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারসহ স্থানীয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী সংলগ্ন ১ একর ২৭ শতক জায়গা অবৈধভাবে বালু ভরাট করে দখল করে নিয়েছে এক আওয়ামীলীগ নেতার বড়ভাই। ঘটনায় দখলদার ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী। এব্যাপারে আদালত আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অবৈধভাবে ভরাটের কারণে ইনলেট বন্ধ হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরী বাঁধের মধ্যে সেচের অভাবে ৪শ’ একর জমিতে ইরি ব্লক বন্ধ হয়ে গেছে। ইরিগেশন বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পরেছে ওই এলাকার দু’শতাধিক কৃষিজীবি পরিবার।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠিকাদার সেকেন্দার আলী স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬০ শতক, পয়সারহাট গ্রামের আবুল কাশেম সিকদারের ছেলে নজরুল সিকদারের ৬১ শতক, স্থানীয় হরেন্দ্র নাথ হালদার, দু:খীরাম হালদার, বেলায়েত বয়াতির জমি দখল করে অবৈধভাবে বালু ভরাট করে। সেকেন্দারের ওই অবৈধ ভরাটের কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইনলেট-আউটলেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরী বাঁধের মধ্যে সেচের অভাবে প্রায় ৪শ’ একর জমিতে ইরি ব্লক বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান ব্লক ম্যানেজার স্থানীয় কালাম মৃধা। ইরিগেশন বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পরেছে ওই এলাকার দু’শতাধিক কৃষক পরিবার। দখলীয় ওই জায়গায় ভরাটের পর ২২ অক্টোবর সেকেন্দারের নেতৃত্বে দলবল দেশীয় অস্ত্রসহ সেখানে টিনশেড ঘর নির্মাণ করতে গেলে নজরুল সিকদার তাতে বাঁধা প্রদান করে। এসময় দখলদাররা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যেভাবেই হোক জায়গায় তারা ঘর তুলবেনই বলে দম্ভ প্রকাশসহ গালাগাল করেন।
এঘটনায় নজরুল সিকদার বাদী হয়ে সেকেন্দার মিয়াসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ২৭ অক্টোবর বরিশাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। নং- ১৩০৪। বিজ্ঞ আদালত আগৈলঝাড়া থানা ওসিকে বিরোধীয় জমিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত সেকেন্দার মিয়া নিজেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার দাবি করে বলেন, তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩০ শতক জায়গা লিজ নিয়ে ভরাট করেছেন। অন্য কারও জায়গা নয়। সেখানে হাঁস,মুরগী ও গরুর খামার করবেন। লিজের জায়গা পরিবর্তন করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, বিষয়টি পনি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বলেই তিনি ভরাট করেছেন। ব্লক বন্ধ হওয়ার ব্যাপারে তিনি কোন সমস্যা হবেনা বলে চাষীরা তাকে জানিয়েছেন বলে জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মাহাবুব জানান, ওই এলাকায় জায়গা লিজ দেয়ার কোন খবর তিনি জানেন না।